স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি : টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২৩

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি সফল বাস্তবায়নের পথ ধরেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা কাজ করছি। দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগ পৌছে দেয়া হয়েছে। দুর্গম দ্বীপ. চরাঞ্চল ও হাওরসহ দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকায় ফোরজি মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে এবং ফাইভজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে কাজ চলছে। ডিজিটাল সংযুক্তির সুদৃঢ় ‍ভিত্তির ওপর দাড়িয়েই নতুন প্রজন্মের হাত ধরে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।

মন্ত্রী শুক্রবার (২১জুলাই) রাতে ঢাকায় হুয়াওয়ে আয়োজিত ‘২৫ ইয়ারস অব টুগেদারনেস, জার্নি অব ট্রাস্ট, সাপোর্ট অ্যান্ড এমপাওয়ারিং বাংলাদেশ” শীর্ষক অনুষ্ঠানে তার বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান হুয়াওয়ের আয়ের এক-পঞ্চমাংশ গবেষণায় বিনিয়োগের জন্য অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। হওয়াওয়ে সেই বন্ধুত্বকে নতুন মাত্রা দিয়েছে। তারা ব্যবসার পাশাপাশি সমাজিক দায়বদ্ধতাতেও বেশ এগিয়ে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইও ওয়েন এবং হুয়াওয়ের বাংলাদেশের সিইও ফ্যান জুনপন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার ডিজিটাল যুগের উপযোগী দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে সরকারের পাশাপাশি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসমূহকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। মন্ত্রী বলেন, আইটিইউ ও ইউপিইউ-এর সদস্যপদ অর্জন, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, এবং বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মার্ট বাংলাদেশের বীজ বপন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সযত্নে সে বীজকে চারা গাছে এবং গত সাড়ে ১৪ বছরে তা বিরাট মহিরূহে রূপান্তর করেছেন।

তিনি গত সাড়ে ১৪ বছরে ডিজিটাল সংযুক্তি বিকাশে বিস্ময়কর অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, কম্পিউটার সাধারণের নাগালে পৌছে দিতে এবং দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের ফলে ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়ে দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশের অভিযাত্রা শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর জননেত্র্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ফলে বাংলাদেশ বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। গত সাড়ে ১৪ বছরে উন্নয়ন অগ্রগতির প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ অভাবনীয় সফলতা অর্জন করেছে।

বংলাদেশ এখন আর পশ্চাদপদ দেশ নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৪১’ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে টেলিডেনসিটি ছিলো শতকরা ৩০ ভাগ, বর্তমানে টেলিডেনসিটি শতকরা ১০৫ ভাগে উন্নীত হয়েছে। সে সময় দেশে সাড়ে সাত জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হতো এবং মাত্র ৮ লাখ মানুষ তা ব্যবহার করতো। বর্তমানে প্রায় তের কোটি মানুষ প্রায় ৫০০০ জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ২০৩০ সালে দেশে ৩০ হাজার জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হবে। ২০০৮ সালে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেটের দাম ছিল ২৭ হাজার টাকা বর্তমানে তা কমিয়ে একদেশ এক রেটে কর্মসূচীর আওতায় মাত্র ৬০ টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। মন্ত্রী দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে এবং দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে হুয়াওয়ের ভূমিকার প্রসংসা করে বলেন, রিসার্স ও ডেভেলপমেন্টে হুয়াওয়ের অবদান ডিজিটাল প্রযুক্তিতে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি ২০১৯ সালে সুইজারল্যান্ডে অবস্থিত বিশ্ব মেধাসত্ত্ব সংস্থা (ডব্লিউআইপিও) পরিদর্শনকালে প্রতিষ্ঠানটির সাথে অভিজ্ঞতা বিনিময়কালে অর্জিত ধারণা তুলে ধরে বলেন, সারা দুনিয়ায় প্যাটেন্ট রেজিস্ট্রেশনের জন্যে যে আবেদন জমা পড়েছে তার প্রায় দেড় গুণ বেশি আবেদন হুয়াওয়ে একাই করেছে। তিনি বলেন, টেলিকম খাতের জন্য টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি প্রযুক্তি সহজলভ্য করতে ও ফাইভজি প্রযুক্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে হুয়াওয়ে।

Nagad

পরে মন্ত্রীদ্বয়কে সঙ্গে নিয়ে মঞ্চে আনুষ্ঠানিক কেক কেটে ২৫ বছর পূর্তি উৎসব পালন করা হয়।

বক্তারা বলেন ‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ’ এই মূলমন্ত্র দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে হুয়াওয়ে ১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও ডিজিটাল রূপান্তরে যথাসম্ভব অবদান রেখে চলেছে।

সারাদিন. ২১ জুলাই