ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন নিশ্চিত করতে হবে : টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ডিজিটাল প্রযুক্তির উদ্ভাবক তৈরি এবং ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন নিশ্চিত করতে হবে। প্রযুক্তিতে শতশত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা অর্জন করেছি। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতাও আমরা অর্জন করেছি। তিনি শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল দক্ষতা সম্পন্ন মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মন্ত্রী আজ বুধবার (১০ মে) সাভারের বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে, এটুআই এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আয়োজিত এমপাওয়ারিং ওয়ার্ক ফোর্স ফর দ্য ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিভ্যুলিউশন: এ কেস স্টাডি ফর এমপ্লয়মেন্ট ইন বাংলাদেশ শীর্ষক ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিভ্যুলিউশন সামিটে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।


ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বড় শক্তির নাম মানুষ। প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট মানুষের কথা বলেছেন। আগামী দিন রোবট-আইওটি-এআই দিয়ে শিল্প কারখানা চলবে। এসব প্রযুক্তির জন্য সংযুক্তির মহাসড়ক তৈরি করতে হবে। আমরা সেই প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছি। নতুন শিল্প বিপ্লবের সংযুক্তির মহাসড়ক হিসেবে আমরা ৫জি পরিক্ষা করে তার উদ্বোধনও করেছি। শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের এই অগ্রদূত শিক্ষার্থীদের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের কারিগর উল্লেখ করে বলেন, প্রযুক্তি হোক বা জ্ঞান হোক তোমরা তোমাদের নিজেদের মত করে তা গ্রহণ করবে এবং তা আত্মস্থ করে প্রয়োগ করতে হবে। তিনি তাদেরকে ৫ম শিল্প বিপ্লবের জন্য নিজেদের উপযোগী করে তৈরি করার আহ্বান জানান। ১৯৬৪ সালে হানিফ উদ্দিন মিয়ার হাত ধরে এই অঞ্চলে কম্পিউটারের অভিযাত্রার ইতিহাস তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ১৯৮৭ সালে কম্পিউটারে বাংলা পত্রিকা প্রকাশের পর থেকে কম্পিউটার যন্ত্র সাধারণের হাতে আসতে শুরু হয়। এর আগে পারমানবিক কমিশন ও আদমজীসহ কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে যোগ বিয়োগসহ প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন কাজে কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের ধারাবাহিকতায় গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল প্রযুক্তি দুনিয়ায় অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তিনি অনুষ্ঠানে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারণা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পক্ষে- বিপক্ষে মতভেদ আছে। এই মতবিরোধ থেকে পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের ধারণা সমাদৃত হচ্ছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যান্ত্রিক। অন্যদিকে পঞ্চম শিল্প বিপ্লব যন্ত্র ও মানুষের মিশেলে মানবিক। আমাদের কাছেও মানুষ আগে যন্ত্র পরে। মানুষ ও যন্ত্রের মিশেলে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। তিনি ডিজিটাল সংযুক্তিতে বাংলাদেশের সফলতা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের দেশব্যাপী ইন্টারনেট ছড়িয়ে দিতে বাংলাদেশ অভাবনীয় সফলতা অর্জন করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত চৌদ্দ বছরে আমরা শুধু ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়কই তৈরি করিনি, ইন্টারনেটের প্রতি এমবিপিএস এর মূল্য ২৭ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৬০ টাকায় নামিয়ে এনেছি। এক দেশ এক রেট নির্ধারণের মাধ্যমে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করা হয়েছে। ইন্টারনেট এখন মানুষের শ্বাস প্রশ্বাসের মতো। ২০০৮ সালে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার হতো সাড়ে সাত জিবিপিএস তা বর্তমানে ৪১ শত জিবিপিএস এ উন্নীত হয়েছে। সে সময়ের ৮ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর স্থলে এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১২ কোটি।
অনুষ্ঠানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান মো: সবুর খান, উপাচার্য প্রফেসর এম লুৎফর রহমান, এটুআই এর এসপাইয়ার টু ইনোভেট প্রকল্পের পরিচালক মো: হুমায়ুন কবির প্রমূখ বক্তৃতা করেন।
মো: সবুর খান এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ডাটা এনালাইসিস সহ প্রযুক্তি প্রয়োগের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর অনুষ্ঠানের বক্তৃতা প্রযুক্তি জ্ঞান আহরণের জন্য শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। তিনি আইটি শিক্ষার্থীদের মন্ত্রীর ধারণ করা আজকের বক্তৃতাটি এআইয়ের মাধ্যমে এনালাইসিস করে প্রাপ্ত উপাত্ত কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।
প্রফেসর এম লুৎফর রহমান বলেন, নতুন শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদেরকে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবক তৈরি করতে হবে।
এটুআই প্রকল্প পরিচালক বলেন, অটুমেশনের ফলে বিদ্যমান অনেক কর্ম খালী হবে তবে নতুন প্রযুক্তি ভিত্তিক নতুন নতুন অনেক কর্মের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীকে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের স্থপতি উল্লেখ করেন।