সম্পদের লোভে বোনকে হত্যা, বোতামের সূত্রে গ্রেপ্তার ভাই

সাভার প্রতিনিধি:সাভার প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ১১:৪০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৫, ২০২৩

সম্পদের লোভে বড় বোন হনুফা আক্তারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে আপন ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী। হাতে গ্লাভস পড়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধের পরেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। খুনের সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তার শার্টের বোতাম ছিঁড়ে যায়। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা সেই বোতামের সূত্র ধরেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) দুপুরে সাভার মডেল থানার হল রুমে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।

এর আগে গত ১২ এপ্রিল রাত ১১ টার দিকে সাভারের বিরুলিয়ার ভাগ্নিবাড়ি এলাকার নিজ বাড়ি থেকে হনুফা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, গত ১২ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টার দিকে স্ত্রী হনুফা আক্তারকে সুস্থ অবস্থায় রেখে পার্শ্ববর্তী মসজিদে তারাবির নামাজ পড়তে যান তার স্বামী হারুন অর রশিদ তুষার। নামাজ শেষে রাত নয়টার দিকে তার নিজ বসতঘরে এসে দেখেন তার স্ত্রী খাটের উপর মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। তার স্ত্রীর বাম গালের এবং থুতনির নিচে একাধিক আঁচড় ছিল। এছাড়াও মুখ দিয়ে রক্তমিশ্রিত লালা বের হচ্ছিল। খাটের উপর একটি বালিশ রক্তমাখা অবস্থায় ছিল। পরে রাত ১১ টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করে সাভার মডেল থানা পুলিশ। এই ঘটনার পরের দিন নিহতের স্বামী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আব্দুল্লাহিল কাফি আরও বলেন, সেই মামলার তদন্তকারী টিম তল্লাশি করে ঘরের মেঝেতে একটি বোতাম এবং একটি হ্যান্ড গ্লাভসের কিছু অংশ পান। উক্ত বোতামটির সাথে নিহতের স্বামীর শার্টের বোতামের সাথে মিল ছিল না। বিভিন্ন কৌশলে তদন্তের একপর্যায়ে দেখা যায়, নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ আলীর পরিহিত শার্টের একটি বোতাম ছেড়া এবং ঘটনাস্থলে প্রাপ্ত বোতামের সঙ্গে মোহাম্মাদ আলীর পরিহিত শার্টের অন্যান্য বোতামের সাথে হুবহু মিল আছে। মোহাম্মাদ আলীর শরীর পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় তাহার ডান কানের নিচে এবং নাকে হালকা নখের আচড় রয়েছে। মোহাম্মাদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাহার বোন হনুফা আক্তার এর হত্যার কথা স্বীকার করে সে।

আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, অনুমান ১২ বছর পূর্বে মোহাম্মদ আলী তাহার পিতা জীবিত থাকা অবস্থায় তাহার সমস্ত সম্পত্তি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করে নেয়। পরবর্তীতে তাহার পিতা কটু ফকির বিজ্ঞ আদালতে দেওয়ানী মামলা দায়ের করে উল্লেখিত জমি রায়ের মাধ্যমে ফেরত পান। অতঃপর কটু ফকির তাহার অনুমান ২০ বিঘা সম্পত্তি নিহত হনুফাকে ওসিয়ত দলিল করে দেন। এরপর হতে ধৃত আসামী মোহাম্মদ আলী তার বোন হনুফাকে অর্ধেক সম্পত্তি ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছে। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে দীর্ঘ দিন ধরে ভাই-বোনের মধ্য ঝগড়া চলে আসছিল। ধৃত আসামী বোনের নিকট সম্পত্তি ফেরত না পেয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় নিহতের স্বামী মোঃ হারুন অর রশিদ তুষার তারাবির নামাজ পড়তে গেলে সেই সুযোগে আসামী মোহাম্মদ আলী হনুফাকে তাহার ঘরে একা পেয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

Nagad