৮ ঘণ্টা পরে ঘুটঘুটে অন্ধকার কাটল রাজধানীর
জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুর থেকে রাজধানীসহ দেশের বড় এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিলো। এরপর প্রায় আট ঘণ্টা পর ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ আসায় অন্ধকার কেটেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় সন্ধ্যার পরেই নেমে আসে অন্ধকার। দালান-কোঠার আড়ালে অনেকটা ঘুটঘুটে অবস্থার সৃষ্টি হয়। এরই মধ্যে ঢাকার বাইরেও বহু এলাকায় বিদ্যুৎ চলে এসেছে। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ না এলেও রাত ১১টার পর সব এরিয়ায় স্বাভাবিক হয়েছে। তবে চাহিদামাফিক বিদ্যুৎ না পাওয়ায় নিয়মিত লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ – বলেছেন , বিশেষ পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করায় এবং গুজবে কান না দেওয়ায় গ্রাহকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।


মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ধন্যবাদ জানিয়ে স্ট্যাটাস দেন তিনি। ফেসবুকে নসরুল হামিদ লেখেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে রাত ৯টার মধ্যে গ্রিড রিস্টোর করা সম্ভব হয়েছে। এখনও অল্প কিছু জায়গাতে বিদ্যুৎ আসেনি বা স্বল্প সময়ের জন্য এসেছিল, সেসব এলাকার গ্রাহকগণ আরেকটু ধৈর্য ধরুন। ধীরে ধীরে লোড বৃদ্ধি করা হচ্ছে। মূল সংকট কেটে গেছে। দ্রুতই আপনারা বিদ্যুৎ পাবেন।
তিনি আরও লেখেন, (মঙ্গলবার) দুপুর ২টা ৪ মিনিটে অনাকাঙ্ক্ষিত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পর ২টা ৩৬ মিনিটে আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন চালুর মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, ময়মনসিংহের কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়। রাত ৯টায় সিস্টেম জেনারেশন ৮ হাজার ৪৩১ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয় এবং সতর্কতার সঙ্গে সেটা বাড়িয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার কাজ চলমান আছে।
ইতোমধ্যে পূর্বাঞ্চলের বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, যেমন- ঘোড়াশাল, আশুগঞ্জ, মেঘনাঘাট, হরিপুর এবং সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট চালু করে ধীরে ধীরে সিস্টেম স্বাভাবিক করা হচ্ছে। ঢাকায় ২ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটের বিপরীতে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে ১ হাজার ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।
ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, এখন পর্যন্ত ডিপিডিসির অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ চলে এসেছে। তবে সব এলাকায় পুরোপুরি দিতে পারিনি এখনও। কোথাও কোথাও আংশিক বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের প্রয়োজন ১৪শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ, সেখানে আমরা পাচ্ছি ৯০০ মেগাওয়াট।
অন্যদিকে, ডেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাওসার আমীর আলী বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। আবহাওয়ার কারণে আমাদের ৯০০ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুতের লাগে। আপাতত ৭০০ মেগাওয়াট পাচ্ছি। তাই লোড ম্যানেজমেন্ট করেই সরবরাহ করতে হচ্ছে।
জানা গেছে, আশুগঞ্জ গ্রিডে ত্রুটির ফলে জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয় (ট্রিপ) হয়। এতে রাজধানীসহ চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেটের অধিকাংশ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৫ মিনিটের দিকে এ বিপর্যয় ঘটে।