৯/১১: আজ ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলার ২১তম বার্ষিকী
আজ সেই ভয়াল ৯/১১। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলার ২১তম বার্ষিকী। ২০০১ সালের এই দিনে সন্ত্রাসীরা যাত্রীবাহী চারটি বিমান ছিনতাই করে একযোগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার ও ভার্জিনিয়ার পেন্টাগনে হামলা চালায়। এ হামলায় কমপক্ষে তিন হাজার লোক নিহত হন। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকও ছিলেন। এর প্রভাব পড়ে সারাবিশ্বের রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে। এ হামলার জন্য উগ্রবাদী গোষ্ঠী আলকায়েদাকে দায়ী করা হয়ে থাকে।
নিহতদের স্মরণে এবারও জানানো হয়েছে শ্রদ্ধা। শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার এ রুটিনওয়ার্ক ফি বছর অব্যাহত থাকে। এদিকে ৯/১১ নামে পরিচিতি পাওয়া ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ শামিল হয় পশ্চিমা দুনিয়া। ওই হামলার জন্য আল কায়েদাকে দায়ী করে দলটির নেতা ওসামা বিন লাদেনের ঘাঁটি আফগানিস্তানে হামলা চালায় ওয়াশিংটন। ক্ষমতাচ্যুত করা হয় লাদেনের মিত্র তৎকালীন তালেবান সরকারকে।


তবে গত ২০ বছরে পরিবর্তন এসেছে সেই দৃশ্যপটেও। ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার দুই দশকের মাথায় গত বছর আফগানিস্তান ছাড়ে যুক্তরাষ্ট্র। ফের কাবুলে ক্ষমতায় বসে তালেবান।
এমন পরিস্থিতিতেই এবার ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার ২১তম বার্ষিকী পালন করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিন বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় নিহতদের স্মরণ করবে পুরো জাতি।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৯/১১ হামলার ২১তম বার্ষিকীতে রোববার ভাষণ দেবেন এবং পেন্টাগনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন রোববার পেনসিলভানিয়ার শ্যাঙ্কসভিলে ফ্লাইট ৯৩ ন্যাশনাল মেমোরিয়াল ওবজারভেন্সে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও তাঁর স্বামী ডগলাস এমহফ যাবেন নিউইয়র্ক সিটিতে। সেখানে ৯/১১ হামলার জাতীয় স্মৃতিসৌধে একটি স্মরণ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন তিনি।
নিহতদের স্মরণে নিউইয়র্কের ৯/১১ মেমোরিয়াল অ্যান্ড মিউজিয়ামে থাকবে বিভিন্ন আয়োজন। রীতি মেনে রোববার সকালে হামলার সময়ে বেল বাজানো হবে। নিহতদের স্বজনরা উচ্চ কণ্ঠে তাদের আত্মীয়দের নাম পড়ে শোনাবেন। টুইন টাওয়ার যেখানে একসময় দাঁড়িয়েছিল সেখান থেকে আবারও শ্রদ্ধা প্রকাশের বাতি জ্বলে আকাশকে উজ্জ্বল করবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য ও শহরে নিহতদের স্মরণে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসীরা চারটি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে। দুটি বিমান আঘাত হানে নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার নামে পরিচিত দুটি ভবনে। দুই ঘণ্টার মধ্যে ভবন দুটি মাটিতে ধসে পড়ে। আর তৃতীয় বিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগনে আঘাত হানে। এ হামলায় ভবনের পশ্চিম পাশের কিছু অংশ ধসে পড়ে। চতুর্থ বিমানটির লক্ষ্য ছিল ওয়াশিংটনে হামলার। কিন্তু যাত্রীদের প্রতিরোধের সময় বিমানটি পেনসিলভানিয়ার বিধ্বস্ত হয়। নিউইয়র্কে সন্ত্রাসী হামলার স্থলে নির্মিত হয়েছে ন্যাশনাল সেপ্ট. ইলেভেন মেমোরিয়াল অ্যান্ড মিউজিয়াম।