সংঘর্ষে না জড়াতে নেতাকর্মীদের কড়া নির্দেশ ওবায়দুল কাদেরের

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৩:৪৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২

নেতাকর্মীদের কোনো ধরনের সংঘর্ষে না জড়াতে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এ নির্দেশনা না মানলে ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, আমাদের দলের নেতাকর্মীদের বলছি নেত্রীর (শেখ হাসিনা) নির্দেশের বাইরে গিয়ে কেউ যদি হামলায় জড়িয়ে পড়েন তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। এসব করলে সরকারের ওপর এসে দায় পড়বে, এজন্য কিন্তু আমরা ছাড় দেবো না। কোনো খারাপ কাজ আমাদের নেত্রী সহ্য করেন না।

সোমবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ শাখা এবং সহযোগী সংগঠনসমূহের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের এক যৌথসভার আগে দেওয়া বক্তব্যে বিএনপির প্রতি এই প্রশ্ন রাখেন তিনি।

এসময় তিনি বলেন, ‘একটি চিহ্নিত মহল’ দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে। এমন ষড়যন্ত্রে শেখ হাসিনা ভয় পান না, তিনি পিছু হটতে জানেন না।

বিভিন্ন ঘটনায় রাজনৈতিক দলগুলোর মিডিয়া কাভারেজের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের তুলনায় বিএনপিকে বেশি প্রধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে মনে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের উচিত বিরোধীদলের বিভিন্ন বক্তব্যের সঙ্গে সরকারি দলে বক্তব্য দেওয়া। কারণ সরকারি দলেরও তো তাদের নিজেদের বক্তব্য আছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মিডিয়ায় বড় বড় কভারেজ হয়। আমাদের বড় বড় নেতাদের নামটাও বলে না। কিন্তু কোথাকার কোন সম্পাদক… কোন মহানগর নেতারাও! আশ্চর্য হয়ে যাই! মূল্যবোধের এত অবক্ষয় আমাদের দেশে। কল্পনা করতেও ভয় লাগে। আমরা তো পাই না। তাদের সাত আটজনকে দিয়ে তারপর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসে। তারপর আবার ত্রিশ সেকেন্ড দিয়েই শেষ। এটা ঠিক নয়।’

Nagad

পাকিস্তান আমলে দেশের মানুষ ভালো ছিল বলে সম্প্রতি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ফখরুল সাহেব বলেছেন, পাকিস্তান আমলেই ভালো ছিলাম। তাদের মনের কথা বেরিয়ে গেছে। এই জাতীয়তাবাদীরা আবারও বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়।

এসময় শপথ করে তিনি বলেন, আমরা আমাদের প্রিয় জন্মভূমিকে পাকিস্তান বানাতে দেবো না। এটাই আমাদের আজকের শপথ, আমরা এই শপথ করছি।

বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কর্মীদের সংঘর্ষ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, কুমিল্লা ও ঢাকার মিরপুরে হামলা হয়েছে ঠিক আছে। কিন্তু বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিএনপির নিজেদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। সেটা কিন্তু মিডিয়া ছাপতে চায় না।

এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘আপনি লক্ষ্য করবেন যে কি অবস্থা। এসব চ্যানেলগুলো শেখ হাসিনা দিয়েছেন। তারা আজকে কি আচরণটা করছে। অনেকেই…আমি সবার কথা বলবো না। তারপর বিভিন্ন মিডিয়া কিভাবে আজকে আচরণ করছে। গণমাধ্যম কি আচরণটা করছে? এই বিষয়টি আমাদের মনে হয় তাদের সাথে আলাপ করা উচিত।’

সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা তাহলে কি পদ্মা করে ভুল করেছেন? করোনাকালে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিয়ে যেটা আমেরিকাও পারেনি। যেটা আমেরিকার রাষ্ট্রদূত পিটার হার্টস নিজে স্বীকার করেছেন। সেটা করে ভুল করেছেন? শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ভারসাম্যমূলক অবস্থায় রেখে কি ভুল করেছেন? মেট্রোরেল, মধুমতি সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, চট্টগ্রামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্ণফুলী টানেল, ঢাকা নারায়ণগঞ্জ শীতলক্ষ্য সেতু, এগুলো কিন্তু কাজ থেমে নেই। ডিসেম্বরের মধ্যে অনেকগুলো উদ্বোধন হয়ে যাবে।’

‘ফ্লাইওভারই হয়েছে ২২টির মতো। আন্ডারপাস ৩০টির ওপরে। রূপপুর পরমাণু কেন্দ্র, হয়ে যাচ্ছে মাতারবাড়ি, পায়রা সমুদ্রবন্দর…এগুলো করে কি শেখ হাসিনা ভুল করেছেন। এগুলো করে কি তিনি ভুল করেছেন। উন্নয়নের কোনো মূল্য নেই? উন্নয়নের মূল্য আছে। আমরা দেখাবো। আগামী নির্বাচনে। মানুষ দুইটা বিষয়কে গুরুত্ব দেবে। শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সততা ও উন্নয়ন।”

এ সময় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।