২৩৮ কোটি টাকা স্থানান্তরের ব্যাখ্যায় যা বলেছে বিসিবি
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নানা বিষয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ফারুক আহমেদ। বোর্ড পরিচালকদের সঙ্গে দূরত্ব, বিপিএল আয়োজনের পেশাদারিত্বের অভাব, টিকিট বিক্রিতে অনিয়ম এবং দলের বাজে পারফরম্যান্সের কারণে তিনি চাপের মুখে রয়েছেন। এর মধ্যেই বিসিবির আর্থিক লেনদেন নিয়ে তার বিরুদ্ধে অস্পষ্টতার অভিযোগ উঠেছে।
গত কয়েক দিন ধরে ক্রিকেট পাড়ায় গুঞ্জন ছিল, বিসিবির ফিক্সড ডিপোজিট থেকে ১২০ কোটি টাকা সরিয়েছেন ফারুক আহমেদ, তা-ও বোর্ড পরিচালকদের না জানিয়ে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিসিবি।


শনিবার (২৬ এপ্রিল) এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বিসিবি জানায়, “জাতীয় গণমাধ্যমের একটি অংশে বোর্ডের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, তা ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং বোর্ড ও সভাপতি ফারুক আহমেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।”
বিবৃতিতে ফিক্সড ডিপোজিটের টাকা স্থানান্তরের ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়, ২০২৪ সালের আগস্টে সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের অর্থনৈতিক সংকট ও পূর্বের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ মাথায় রেখে ফারুক আহমেদ বিসিবির আর্থিক নিরাপত্তা অগ্রাধিকার দেন। এ লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে ২৩৮ কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘গ্রীন’ ও ‘ইয়েলো’ জোনভুক্ত ১৩টি নির্ভরযোগ্য ব্যাংকে পুনঃবিনিয়োগ করা হয়। বাকি ১২ কোটি টাকা বিসিবির পরিচালন ব্যয়ের জন্য নির্ধারিত একাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।
বিসিবি আরও জানায়, বোর্ড সভাপতির একক সিদ্ধান্তে কোনো ব্যাংক পরিবর্তন বা লেনদেন হয় না। আর্থিক লেনদেনে দুজন বোর্ড পরিচালক—ফিনান্স কমিটির চেয়ারম্যান ফাহিম সিনহা ও টেন্ডার ও পারচেজ কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনাম—স্বাক্ষর প্রদানকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতির কোনো স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয় না।
বিসিবির দাবি, কিছু সুবিধাভোগী মহল এবং ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করছে। তবে বর্তমান আর্থিক কৌশলে ২-৫ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত মুনাফা অর্জিত হয়েছে। সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে এ পর্যন্ত ১৩টি নির্ভরযোগ্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিসিবি স্থায়ী আমানত সংরক্ষণ করছে এবং এর ফলে স্পনসরশিপ ও অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ২০ কোটি টাকার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।
বিসিবি বিবৃতিতে আরও জানায়, তারা সর্বোচ্চ মানের আর্থিক স্বচ্ছতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং তথ্যভিত্তিক তদন্তকে স্বাগত জানায়। পাশাপাশি, গুজব বা ভিত্তিহীন প্রতিবেদনে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।