ঢাকার দুই সিটি একীভূত করে বৃহত্তর মহানগরী গঠনের প্রস্তাব

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০২৫

সিটি করপোরেশন কাঠামো শক্তিশালী করতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে একীভূত করে একটি বৃহত্তর ঢাকা মহানগরী কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। পাশাপাশি পুরো ঢাকা শহরকে ২০টি সিটি কাউন্সিলে ভাগ করার সুপারিশও করা হয়েছে।

কমিশনের প্রস্তাবনায় বলা হয়, এ ব্যবস্থায় মেয়রের অধীনে ওয়াসা, রাজউক, তিতাস, ডিএমপি, ডেসা, ডিপিডিসিসহ সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলোর কার্যক্রমের ওপর সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এতে মেয়রের ক্ষমতা বাড়বে এবং নগর সেবায় গতি আসবে বলে কমিশনের বিশ্বাস।

কমিশনের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, “বর্তমান কাঠামো যথাযথ নয়। আমরা লন্ডনের মতো সিটি গভর্নমেন্ট কাঠামো প্রস্তাব করেছি যাতে মেয়রের অধীনে কার্যকর সমন্বয় সম্ভব হয়।”

নতুন কাঠামোর প্রস্তাব:
সেন্ট্রাল সিটি করপোরেশন: থাকবে প্রশাসনিক ক্ষমতা, নিরাপত্তা, ট্যাক্স আদায় ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা দেখবে।

২০টি সিটি কাউন্সিল: বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশক নিধন, স্বাস্থ্যসেবা, ইত্যাদি পরিচালনা করবে।

কাঠামোগত বিভাজন:
বিধানিক অংশ: নির্বাচিত কাউন্সিলর, মেয়র, ছায়া কাউন্সিল নেতা, সভাধ্যক্ষ, স্থায়ী কমিটি, সচিব ও কর্মী।

Nagad

নির্বাহী অংশ: মেয়র, মেয়রস কাউন্সিল, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং বিদ্যমান কর্মকর্তা-কর্মচারী।

আরও প্রস্তাবনা:
জনস্বাস্থ্য ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর একীভূত করে ‘জন প্রকৌশল সেবা’ নামক নতুন অধিদপ্তর গঠনের সুপারিশ।

কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে জনবল ও সরবরাহ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে স্থানান্তরের পরিকল্পনা।

স্থানীয় কর কাঠামো:

ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনে পরিবেশ ও পর্যটন কর আরোপের পরামর্শ।

ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনে স্থানীয় সরকার কর আরোপের সুপারিশ।

কর আদায়ের একক কর্তৃত্ব স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর হাতে রাখার আহ্বান।

পার্বত্য এলাকার জন্য প্রস্তাব:
তিন পার্বত্য জেলার সরকারি দপ্তর, জনবল ও অর্থ জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তরের সুপারিশ।

পার্বত্য জেলার সব স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনার প্রস্তাব।

অর্থ বরাদ্দ সংক্রান্ত সুপারিশ:
জাতীয়ভাবে আহরিত মূসকের এক-তৃতীয়াংশ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মোট রাজস্বের এক-চতুর্থাংশ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বরাদ্দের প্রস্তাব।

গত রবিবার কমিশনের প্রধান ড. তোফায়েল আহমেদ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন। এ সময় কমিশনের অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।