আংশিক অবৈধ পঞ্চদশ সংশোধনী, ফিরল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা
দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বিধান বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায়চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীকে আংশিক অবৈধ ঘোষণা করেন। এ সংশোধনী কেন অবৈধ হবে না, এই মর্মে জারি করা রুলের চূড়ান্ত রায়ে আদালত এ সিদ্ধান্ত দেন।


রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন এবং এর ৭ অনুচ্ছেদ হলো ধ্রুবতারা। আদালত আরও উল্লেখ করেন, পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু অংশ সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর পরিপন্থী।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর দীর্ঘ ২৩ কার্যদিবস শুনানি শেষে রায়ের জন্য ১৭ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের বেঞ্চ গত ১৯ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পঞ্চদশ সংশোধনীকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন। রিটকারী সুজনের পক্ষ থেকে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া।
বিএনপির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুল। জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির ও ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী। ইনসানিয়াত বিপ্লবের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এবং চার আবেদনকারীর পক্ষে ব্যারিস্টার জুনায়েদ আহমেদ চৌধুরী। ইন্টারভেনর হিসেবে অংশ নেন ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।
রুলের শুনানিতে বিএনপির পক্ষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার যুক্ত হন। পাশাপাশি ইনসানিয়াত বিপ্লব, গণফোরাম ও চার আবেদনকারীও ইন্টারভেনর হিসেবে পক্ষভুক্ত হন।
এই রায়ের মাধ্যমে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের বিধান বাতিল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা হলো। আদালতের এই সিদ্ধান্ত দেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।