শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষ: বিনোদপুর বাজার পরিস্থিতি থমথম

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২৩

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৪ জন। তাদের অধিকাংশই রাবি শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও আছেন।

তবে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন রাবির কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে তিনজনের চোখে ও তিনজনের পুরো শরীরে গুলির ক্ষত চিহ্ন আছে।

রোববার (১২ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এর আগে শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে এখন পর্যন্ত নগরীর চৌদ্দপাই এলাকার বিহার মোড়, তালাইমারি ভদ্রা মোড় এলাকার রাস্তা বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে এই সড়ক ব্যবহার করা বিভিন্ন যানবাহনগুলো বিকল্প পথ দিয়ে চলাচল করছে।

জানা গেছে, শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও স্থানীয়দের মধ্যে বিনোদপুর বাজারে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়। রাকিব নামের এক শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, রাবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় মোট ৮৪ জন ভর্তি আছেন। তাদের অধিকাংশ রাবি শিক্ষার্থী। এর পাশাপাশি পুলিশ ও অন্য সাধারণ জনগণও আছে। তাদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা চলছে।

তিনি বলেন, রাবির সাত শিক্ষার্থীর অবস্থা কিছুটা গুরুতর। তাদের শরীরে বুলেটের চিহ্ন আছে। বিশেষ করে তিন শিক্ষার্থীর চোখে বুলেট লেগেছে। এক শিক্ষার্থীর মাথায় বুলেট লেগেছে তাকে আইসিইউতে ভর্তি রাখা হয়েছে। অন্যদের স্বাভাবিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে সকালে চিকিৎসক এসে কারও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন কী না সেটি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

Nagad

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বগুড়া থেকে ‘মোহাম্মদ’ নামের একটি বাসে রাজশাহী যাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী। বাসের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে চালক শরিফুল ও তার সহযোগী রিপনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ওই শিক্ষার্থীর। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিনোদপুর বাজারে বাস থেকে নামার সময় তাদের আবারও কথা কাটাকাটি হয়। এসময় বিনোদপুর বাজারের একজন ব্যবসায়ী বাসচালকের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হাতাহাতি হয় তার।
খবর পেয়ে সেখানে যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এসময় ব্যবসায়ীরা তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। ধাওয়া দিয়ে তাকে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এতেই বড় হয়ে যায় ঘটনাটি।

খবর পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল থেকে বের হয়ে বিনোদপুর গেটের পাশে অবস্থান নেন। আর ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেন রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে বিনোদপুর বাজারে। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে আহত হন অনেক শিক্ষার্থী। ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আহত হন অন্তত ১০ জন।